শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন

News Headline :
রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাতটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা যানজট নিরসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা শ্যামনগরে এবার কৃষকরা আমন ধানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছে পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ১জন আহত শাজাহানপুরে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মান্দায় বিল উন্মুক্তের দাবিতে জেলেদের সংবাদ সম্মেলন সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির হাবিপ্রবিতে আবাসন সংকট-হলে থেকেও অনাবাসিক অনেক ছাত্র রাজশাহী মহানগরীতে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রেফতার ১৪ রাজশাহীতে অর্ধশত বোতল ফেনসিডিল-সহ মাদক কারবারী গ্রেফতার

গারো পাহাড়ে এবার কাজুবাদাম চাষ

Reading Time: 2 minutes

শাহরিয়ার মিল্টন,শেরপুর :
এবার শেরপুর গারো পাহাড়ে পরীক্ষামূলকভাবে কাজুবাদাম চাষ হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাহাড়ি এলাকার বাগানগুলোর কাজুবাদাম পরিপক্ব হতে শুরু করেছে এবং চাষিদের মুখে হাসিও ফুটতে শুরু করেছে। ফলে সীমান্তের পাহাড়ি আদিবাসী-বাঙালিদের মনে আশার আলো জেগে উঠেছে। সেইসঙ্গে অবহেলিত ও প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদের অর্থনৈতিক চাকা ঘুরে যেতে পারে এ উচ্চ মূল্যের কাজুবাদাম চাষে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরত্বের এ সীমান্তের পাহাড়ি এলাকায় হাতির আক্রমণের ভয়ে এবং কিছু এলাকায় পানির অভাবে বিস্তীর্ণ জমি পতিত থাকে। তারা মনে করছে পাহাড়ি অনেক অনাবাদি জমিতে আমদানিনির্ভর এ কাজুবাদাম চাষ করলে দেশের কৃষিতে যোগ হবে নতুন ফসল। তেমনি স্থানীয় বেকারত্বের সমস্যার সমাধানসহ নতুন কর্মক্ষেত্রের সুযোগ হবে। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক আগে থেকেই কাজুবাদাম চাষ হয়ে আসছে। তবে শেরপুরের গারো পাহাড়ি এলাকায় গত প্রায় ৩ বছর আগে জেলা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগ ‘কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও স¤প্রসারণ প্রকল্প’র আওতায় সীমান্তের তিন উপজেলা পাহাড়ি এলাকার সাড়ে ১৮ একর জমিতে মোট ৩৬টি প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে কম্বোডিয়ান-এম ২৩ জাতের এ কাজুবাদামের চারা বিতরণের মধ্য দিয়ে এ এলাকায় কাজুবাদাম চাষ শুরু করা হয়। গত প্রায় ৩ বছরের মাথায়ই বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী বাগানে ফুল ও ফল এসে ইতোমধ্যে বাদাম পাকতে শুরু করেছে। বাগানগুলোতে এখন থোকা থোকা ঝুলছে কাজুবাদাম। এ কাজুবাদাম গাছ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। আর প্রতি কেজি বাদাম বিক্রি করা যায় ৮ শ থেকে ১ হাজার টাকা। তবে প্রসেসিং ছাড়াগুলো ৪শ থেকে ৫শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যায়। এ বাদাম পাকার পর ওপরের অংশ আপেলের মতো খাওয়া যায় এবং নিচের অংশ নির্ধারিত যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় বাদাম বের করা হয়ে থাকে। শেরপুরের পাহাড়ি এলাকার মাটি খুবই উৎকৃষ্ট হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই গাছগুলোতে বাদাম আসতে শুরু করেছে এবং আগামীতে আরও ফলন বাড়বে বলে আশা করছে বাগানমালিকরা। এদিকে গারো পাহাড়ে আমদানিনির্ভর এ উচ্চমূল্যের কাজু বাদামের চাষ হচ্ছে এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় অনেকে কৃষি উদ্যোক্তা ও বেকার যুবকরা আসছেন বাগান দেখতে। তারাও বাণিজ্যিকভাবে এ লাভজনক কাজুবাদাম চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তবে কেউ কেউ হাতির আক্রমণের ভয়ের কথাও জানিয়েছে। যদি কাটা তারের বেড়া দিয়ে এবং হাতির আক্রমণ ঠেকানো যায়, তবে এ কাজুবাদাম চাষে স্থানীয়দের অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান করে দেবে বলে কৃষি বিভাগ ও স্থানীয়রা জানান।
এ বিষয়ে ঝিনাইগাতির গজনি পাহাড়ি এলাকার বাগান মালিক সোয়েব হাসান সাকিল বলেন, কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশে এগিয়ে যাচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় কৃষি বিভাগের এ পাইলট প্রকল্প হচ্ছে কাজুবাদাম চাষ। আমার বাগানে গত বছর থেকেই ফুল আসতে শুরু করে এবং এবার ফুল ও ফল হয়ে পাকতে শুরু করছে। আমার ৫০ শতক জমিতে ২ শ গাছ রয়েছে। গত তিন বছরে আমার সব মিলে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি, আগামী বছর থেকে ফলন আরও বাড়বে এবং প্রতি গাছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কেজি করে বাদাম পাওয়া যাবে। এতে ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে বাদাম বিক্রি করা যাবে।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, উচ্চ মূল্যের এ কাজুবাদাম দেশের নতুন অর্থকরী ফসল। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কাজুবাদামের উৎপাদন বাড়ানোর প্রকল্প নেয়া হয়েছে। দেশে এ ফসলের অনেক ঘাটতি রয়েছে। প্রতিবছর এই কাজুবাদাম আমদানি করতে প্রচুর টাকা ব্যয় করতে হয়। এই আমদানি নির্ভরতা কমাতে এবং বাংলাদেশকে সমৃদ্ধি করতে নতুন এ ফসলকে শেরপুরের গারো পাহাড়সহ পুরো দেশে ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। তবে হাতির উপদ্রবের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে কৃষকদের মাঝে কাজুবাদাম চাষ সাড়া ফেলবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com